একদিকে করোনা অতিমারীর জন্য চাষী ও দেশের সবাই বিভিন্ন সমস্যায় ভুগছে। আর অন্যদিকে আমফানের ঝড়ে
মেদিনিপুর পশ্চিমবঙ্গের বেশ কয়েকটি জেলায় (হাওড়া, হুগলি, উত্তর
ও দক্ষিণ ২৪ পরগণা, কলকাতা, পূর্ব ও পশ্চিম মেদনিপুর এবং পূর্ব বর্ধমান) চরম ক্ষতি হয়, অনেক ঘর ভেঙে যায়, ফসলের ক্ষতি হয়, আবার অনেক জায়গায় যেমন দক্ষিণ ২৪ পরগণা ও উত্তর ২৪ পরগণায়
নদীর বাঁধ উপচে নোনা জল ঢুকে
যায় চাষের জমিতে। নোনা জল ক্ষেতে ঢুকে যাওয়ায় চাষীদের মাথায় হাত কারণ নোনা জল ক্ষেতে ঢুকে জল ও মাটির ক্ষারত্ব বেড়ে যায় যার ফলে ফলন ভাল হয় না।
পশ্চিমবঙ্গ ক্ষেত মজুর সমিতি তাদের সদস্যদের সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসে। দক্ষিণ ২৪ পরগণায় ৮০০ সদস্যদের ৮ কেজি মাথাপিছু ও উত্তর ২৪ পরগণায় ৫০০ সদস্যদের ১ কেজি মাথাপিছু নোনা জলে সহনশীল ধানের বীজ ও কিছু জনকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। ৮০ শতাংশ চাষীদের খুব ভাল ফলন হয়েছে, উত্তর ২৪ পরগণায় ১০ % চাষীদের বীজ দিতেয় দেরি হয়েছিল তাই সেরকম ভাল ফলন হয়নি, আর দক্ষিণ ২৪ পরগণায় বীজ দিতে দেরি হওয়া বাকি ১০% চাষীরা খরাই চাষ করবে বলে বীজ সংরক্ষণ করে রেখেছে। এই ধান বীজ চাষ করে চাষীরা খুব খুশি। তারা এই কারণে আরও বেশি পরিমাণ বীজের দাবি করেছে।
অন্যদিকে সরকার থেকে উত্তর ২৪ পরগণায় হিঙ্গলগঞ্জ ব্লকে বিভিন্ন গ্রামের চাষীদের বিশেষ প্রজাতির ধানের বীজ দেওয়া হয়, নোনা জমিতেও ভাল ফলন দেবে বলে চাষীদের আশ্বস্ত করেন কৃষি কর্তারা। কিন্তু এই বীজে ফলন একদম ভাল হয়নি, সমস্ত চাষীদের মাথায় হাত ধানের ফলন দেখে। যে জমিতে ১০ বস্তা ফলন পাওয়ার কথা সেখানে হয়তো মেড়েকেটে ২ বস্তা ধান পাওয়া যাবে। কিছু চাষী ধান কেটে ঘরে আনবে না বলেও ভেবেছে। কারণ ধান কেটে ঘরে আনতে গেলে আরও অনেক টাকা লোকসান হবে।
https://www.anandabazar.com/district/24-paraganas/even- in-government-seeds-the-yield-is-almost-zero-1.1230934
এখানে সঙ্গত প্রশ্ন, কেন একই জেলাতে পশ্চিমবঙ্গ ক্ষেতমজুর সমিতি এবং সরকারের দেওয়া বীজগুলি বিপরীত ফলাফল হয়েছে?
এক দিক দিয়ে, পশ্চিমবঙ্গ ক্ষেতমজুর সমিতি দেওয়া বীজগুলিতে
খুব ভাল ফলন হয়েছে, অন্য দিকে সরকারের দেওয়া বীজগুলি ফলন হয়নি বলেই চলে। সরকার যে দায়িত্বহীন ভাবে কাজ করছে তা চরম চিন্তার বিষয়
এবং আমরা আশঙ্কা করছি যে যদি এভাবে চলতে থাকে তবে সরকারের হস্তক্ষেপেই কৃষকদের দুর্দশা
কম হওয়ার পরিবর্তে, বৃদ্ধি হবে।
No comments:
Post a Comment